alexa

Carrer tips

মোঃ ওয়ালিদুর রহমান বিদ্যুৎ,

ইংরেজিতে দক্ষতা এবং এপ্রোপ্রিয়েট ইন্টারভিউয়ের গুরুত্ব

ইংরেজিতে দক্ষতা এবং এপ্রোপ্রিয়েট ইন্টারভিউয়ের গুরুত্ব
Importance of English and Serious Interview

কয়েকদিন আগে ফেসবুক ও লিংকডইনে ইংরেজির প্রয়োজনীয়তা এবং সিরিয়াস ইন্টারভিউ এর যৌক্তিকতা নিয়ে একটা প্রশ্ন করেছিলাম। প্রচুর মানুষ তাতে জবাব দিয়েছেন। একটা বড় অংশই ছিলেন যারা মনে করেন ইংরেজিতে দক্ষতা থাকাটা তেমন জরুরী না কিংবা সব জবের জন্য অত্যাবশ্যক না। কেউ কেউ ইংরেজির দক্ষতা চাওয়াটাকেই অহেতুক মনে করেন। সবার মন্তব্য ও পক্ষে বিপক্ষের যুক্তি পর্যালোচনা করার জন্যই মূলত আমার আজকের লেখা।

ভারতীয় একটা মুভি দেখেছিলাম, ইংলিশ ভিংলিশ। শ্রীদেবীর বোধহয় এটা সেরা মুভিগুলোর একটা যেখানে তাকে ইংরেজি না জানায় নাস্তানাবুদ হতে আর ইংরেজি শেখার বিভিন্ন সংগ্রাম করতে দেখা যায়।

ইংরেজি শেখার উপর গুরুত্ব দেয়া আমার খুব বোরিং একটা স্বভাব যা নিয়ে বহু মানুষ আমার উপর বিরক্ত। বহুকাল আগে একবার একটা কোম্পানীর মার্কেটিং এর লোকেরা তাদের একটি প্রযুক্তি সংক্রান্ত পণ্যের ডেমো দেবার জন্য এলো। সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের সব কর্মকর্তারা তাদের বস সহ প্রেজেন্টেশনে হাজির। ঘন্টাখানেক ইংরেজিতে পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দিলেন বিদেশী প্রেজেন্টার। আমি খেয়াল করলাম পুরো পেজেন্টেশনে পিনপতন নিরবতা। শ্রোতারা সব গভীর মনোযোগের সাথে কথা শুনছে। এমনিতে নামাজের মধ্যেও মানুষ দেখি হাঁচি কাশি দেয়। অথচ এই পুরো একঘন্টা কেউ একটা কাশিও দেয়নি। আমি মুগ্ধ হলাম তাদের মনোযোগ দেখে। পেজেন্টেশন শেষ হবার পর বিদেশী প্রশ্ন করল “এনি কোয়েশ্চেন?” রুমে পিনপতন নিরবতা। আবার প্রশ্ন “এনি কোয়েশ্চেন?” রুমে এখনো কবরের মত নিরবতা। তো প্রশ্নকর্তা এবার নিজেই তার প্রেজেন্টেশনের খুটিনাটি সম্মন্ধে শ্রোতাদের মতামত জানতে চাইলেন। শ্রোতারা এবার একে অন্যের মুখের দিকে তাকাতে শুরু করলেন। এতক্ষণে রুমের অস্বাভাবিক নিরবতার রহস্য বোঝা গেল। উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের কেউই ইংরেজিতে দেয়া প্রেজেন্টেশনের ছিটেফোঁটাও বোঝেন নি। ইংরেজি প্রশ্নও নয়। কী বিচিত্র এই দেশ! ন্যুনতম ইংরেজি জ্ঞান না থাকার পরও বিভাগীয় প্রধান।

অনেক মানুষ আমার উপরে খুব বিরক্ত হয় যখন আমি মানুষদের ইংরেজি জানার জন্য জোর দিই, ইংরেজি শেখার কথা বারবার বলি। কেন বলি অবশ্যই বুঝতে পারছেন? তবে দুর্মূখেরা উল্টো বলে, দেখেন, ইংরেজিতে সামান্য দাড়ি কমা ভুল করাতেই না বাংলাদেশ ব্যংকের রিজার্ভের সব টাকা ডাকাতরা হ্যাক করে নিতে পারল না। তাই ভুল ইংরেজিই তো ভাল। একজন অর্থনীতিতে মাস্টার ডিগ্রীধারী এসেছিলেন ইন্টারভিউ দিতে। ইন্টারভিউ শুরু করতেই তিনি বললেন, আমাকে ইংরেজিতে প্রশ্ন করলে পারব না, ইংরেজিতে লিখতে পারব না। কথা না বাড়িয়ে সংক্ষেপে বলি কেন দরকার ইংরেজির দক্ষতা:

১. ইংরেজি দরকার কি দরকার না সেটা নির্ভর করে পজিশনের উপরে। আপনি যদি এমন একটা পজিশনে চাকরী করতে চান যেখানকার কাজের ধরনটাই হল ইংরেজি লাগে (বিশেষত এক্সিকিউটিভ হোয়াইট কলার জব) তবে আপনার জন্য ইংরেজিটা সারভাইভাল, কম্পিটেন্সি, কম্পিটিশন ও প্রেস্টিজ ইস্যু। দেশের ১০০ ভাগ মানুষকে ইংরেজিতে সুদক্ষ হতে হবে সেটা আমি বলছি না। শুধু যাদের চাকরি বা ব্যাবসার ধরণ অনুযায়ী দরকার তাদের কথা বলা হচ্ছে।

২. বিভিন্ন বিদেশি ক্রেতাদের সাথে লেনদেন করা এবং মডার্ন প্র্যাকটিসের জন্য যে পরিমাণ কনটেন্ট লিখতে হয় তার জন্য অবশ্যই শুদ্ধ ইংরেজিজানা দরকার আছে। ক্লারিক্যাল কাজের থেকে ডেভেলপমেন্টাল কাজের মুল্যায়ন বেশী হয়ে থাকে। ডেভেলপমেন্টাল কাজ করতে কনটেন্ট ডেভেলপ করা তথা ইংরেজি অত্যাবশ্যক।

৩. ইংরেজিতে যথেষ্ট দক্ষতা না থাকলে সময়ের সাথে সাথে পড়ার জগত বা শেখার আগ্রহটা কমে যায়। কারন এখনো আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ইংরেজির ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। জ্ঞানের উৎসের সিংহভাগ ইংরেজিতে। যদি ইংরেজি না জানি, তাতে করে জানার জগতটা ছোট হয়ে যাবে এবং স্বাভাবিকভাবেই জানতে চাওয়ার আগ্রহটা সীমিত হয়ে যাবে। যদি কারো সর্দি-এলার্জি থাকে, স্বাভাবিকভাবেই তিনি আইসক্রিমের বিজ্ঞাপন দেখলে আগ্রহ বোধ করবেন না।

৪. একদম মারমার কাটকাট করে যদি বলি ইংরেজি কেন দরকার তাহলে বলব কমিউনিকেশন, করেসপনডেন্স, কনটেন্ট রাইটিং, রিপোর্টিং, ফরেন ডিপেনডেন্সি, ফরেন নেটওয়ার্কিং, ফরেন ট্যুর, ডাটা মেইনটেইনিং, প্রেজেন্টেশন/ডেমোনেস্ট্রেশন, প্রোগ্রামিং, নেগোশিয়েশন এসকল কাজের কোনোটা যদি আপনার দায়িত্বের মধ্যে পরে তবে আপনাকে ইংরেজি জানতে হবে।

৫. অনেকে মাতৃভাষার জন্য আমাদের রক্তদানের কথা স্মরণ করিয়ে বলতে চান, যদি ইংরেজিই সব হয় তবে কেন ভাষা আন্দোলনে জীবন দিলাম কিংবা সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলনের দাবীর তাহলে কী হবে? ভাষা আন্দোলন করেছিলাম বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা বহাল রাখার জন্য। বাংলা কেন্দ্রীক জাতিসভ্যতার অস্তিত্ব রক্ষার জন্য। মায়ের ভাষার সম্মান ধরে রাখতে। ইংরেজিকে বিতাড়িত করতে নয়। আর বাংলাকে সব যায়গায় প্রচার করার জন্য ইংরেজিকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। বাংলাকে দরকার আমাদের আত্ম-পরিচয়ের স্বার্থে। ইংরেজির দরকার সম্পূর্ন বাণিজ্যিক স্বার্থে। ভাষা আন্দোলনের সাথে ইংরেজি জানার কোনো বিরোধ নেই। বাংলাকে পূর্ণ মর্যাদা ও অগ্রাধিকার দিয়েও ইংরেজি শেখা যায়।

৬. আন্তর্জাতিক বাজারে ভাষা হিসেবে ইংরেজির গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি এবং এটি সারা পৃথিবীতে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ভাষা। তাই আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ব্যবসা, বানিজ্য, যোগাযোগ, বিনিময়, শিক্ষা, গবেষনার প্রয়জনেই ইংরেজি জানা লাগে।

৭. কেউ কেউ চায়নিজ, কোরিয়ান বা জাপানীজদের ইংরেজি না জানা সত্ত্বেও উন্নতি করাকে যুক্তি হিসেবে দেখান। আমি কখনোই বলি না, উন্নতি (অর্থনৈতিক) করতে হলে ইংরেজি জানতেই হবে বিশেষত সারা দেশের সব মানুষের। ইংরেজি জানতে হবে নির্দিষ্ট কিছু দরকারে এবং নির্দিষ্ট কাজের মানুষদের। চায়নিজরা ইংরেজি না পেরেও অর্থনৈতিক সুপার পাওয়ার হয়েছে ঠিকই কিন্তু তারাই কিন্তু যখন ইংরেজি ভাষী কোনো প্রতিষ্ঠান বা দেশের সাথে বিজনেস ডিলের প্রশ্ন আসে তখন দোভাষী অবশ্যই সাথে নেয়। তো ইংরেজিকে কিন্তু তারা অস্বীকার করতে পারছে না। আর সমস্ত চায়নিজরা বাই ডিফল্ট ইংরেজি নির্বাসনে দিয়েছে এ কথা কে বলল ভাই?

৮. কেউ কেউ বলেন, ইংরেজি লাগবে না। কমিউনিকেশন করতে পারলেই হল। “আরে ভাই ধুমাইয়া মার্কেটিং জব করছি, ইংরেজি না জেনেই, জাপানীদের সাথে কাজ করি ইংরেজি না জেনেই” ইত্যাদি।যদি আপনাকে ইউএসএতে বা অষ্ট্রেলিয়ায় মার্কেটিং করতে হয় তখন কী করবেন? বাংলায় করবেন? আর চায়নিজদের সাথে যদি আপনি ইংরেজি না জেনেই কাজ করে থাকেন তো তাদের সাথে কথা বলেন কোন ভাষায়? তারা বাংলায় বলে, না আপনি চায়নিজ বলেন? যদি তারা বাংলায় বলে বা আপনি চায়নিজে, তবে তো আপনি মেনেই নিলেন যে বিদেশী ভাষা জানার দরকার আছে। আর সেক্ষেত্রে সর্বাধিক প্রচলিত বিদেশী ভাষা হিসেবে ইংরেজিই যদি শেখেন তো ক্ষতি কী? আর যদি বলেন, কোনো ভাষাতেই না, বাংলা ইংরেজি চায়নিজ, ইশারায় সবকিছু মিলিয়ে একরকম যোগাযোগ রক্ষা করে কাজ চালাই তাহলে ভাবুন, সব কাজই কি ওভাবে চালাতে পারবেন?

৯. কাজ বোঝাতে পারলেই তো হল, কাজ উদ্ধার হলেই তো হল, কমিউনিকেট করতে পারলেই তো হল, ইংরেজি বড় কথা নয় এমন যুক্তি দেন অনেকে। হ্যা, কাজ উদ্ধার হওয়া নিয়েই কথা। তবে কাজটা যদি এমন হয় যেখানে আপনাকে ইশারায় কাজ চালালে হবে না, যেমন মনে করুন, আপনাকে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের উপর একটা পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দিতে হবে বিদেশী বায়ার বা ডেলিগেটসের সামনে, তখন কী করবেন?

১০. ডাটাবেসের প্রয়োজনীয়তা তো জানেন? তো যদি আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য একসেল শীটেও ডাটা রাখেন সেটা কি বাংলায় রাখতে পারবেন? ইংরেজি লাগবে না?

১১. ইংরেজি জানা বলতে আপনাকে ইংরেজির জাহাজ হতে বলা হচ্ছে না। সুপার IELTS বা GMAT স্কোর চাওয়া হচ্ছে না। শুধুমাত্র ইংরেজিতে কথা বলা, লেখা, ইংরেজি পড়া ও বোঝার দক্ষতাকে বোঝানো হচ্ছে।

১২. ”ইংরেজীতে দক্ষ এবং সিরিয়াস ইন্টারভিউ তে উত্তীর্ণ হওয়ার পরে ও অনেকে কাজ পারে না” এই যুক্তি দিয়েছেন কেউ কেউ। সেটা কি ইংরেজি জানার দোষে? তার জন্য কি ইংরেজি শেখা বন্ধ করে দেব? আর আপনাকে কে বলল, শুধু ইংরেজি জানাই দক্ষতার একমাত্র ইন্ডিকেটর বা ইন্টারভিউয়ার শুধু ইংরেজি জানলেই প্রার্থীকে যোগ্য বলে মনে করেন? ইংরেজি জানা অনেক যোগ্যতার একটি মাত্র। সাথে আরো যোগ্যতা লাগে।

১৩. কেউ কেউ মনে করেন তারা রবীন্দ্রনাথের পিতামাতামহের দৃষ্টান্ত অনুসরন করবেন “আগে চাই বাংলা ভাষার গাঁথুনি, এরপর ইংরেজির পত্তন।” এখানে কিন্তু ইংরেজি শিখতে না করা হয়নি। আগে বাংলাকে শিখে তারপর ইংরেজিতে দক্ষতা বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ কিন্তু তার গীতাঞ্জলি কাব্যের বাংলা রূপের জন্য নোবেল পাননি। পেয়েছেন যখন ইংরেজিতে কনভার্ট করে লেখা হয়েছে (আমার ভুলও হতে পারে)। ভাই, সহজ ব্যাপার, আপনি যদি শুধু বাংলা শেখাকেই যথেষ্ট মনে করেন, তবে আপনি চাকরীর বাজারে শুরুতেই প্রতিযোগীতায় পিছিয়ে যাবেন কারন এখনকার দিনে ছেলেমেয়েরা রীতিমতো ২/৩ টি ভাষা রপ্ত করছে যার মধ্যে ফ্রেঞ্চ, জার্মানও আছে।

১৪. অনেকে বলবেন, ইংরেজি তো জাস্ট একটি ভাষা, ইংরেজিতো জ্ঞান নয়, নিজের মাতৃভাষা বাদ দিয়ে ইংরেজি নিয়ে কেন পড়লাম? তাছাড়া কেউ কেউ বলেন, ইংরেজি নিয়ে এত মাতামাতি করার জন্যই কি ভাষা আন্দোলন করেছিলাম? ভাই, আমি চাকরীর বাজারের বাস্তবতার কথা বলছি। আবেগ বা নৈতিকতা নয়। যিনি বা যেই কোম্পানীরা চাকরী দেবেন তারা যদি ইংরেজিতে দক্ষতা খোঁজেন আর আপনি মাতৃভাষার দোহাই দিয়ে অভিমান করে ইংরেজিকে দূরে সরাতে চান তাহলে কী করার?

১৫. সবশেষে, একজন বলেছেন, ”যে দেশে মানুষের পেটে ভাত জোটে না, সেদেশে ইংরেজি শিখে কী হবে?” ভাই, পেটে ভাত যোগাতে যা যা করতে হবে সেগুলো করতে গেলে অনেকগুলো কাজেই ইংরেজি লাগবে।

ইংরেজিতে দক্ষতা বিকাশ করার জন্য ভাষাটির চারটি অংশঃ পড়া, লেখা, বলা এবং শোনাতে দক্ষ ও নির্ভুল হতে হবে। যা করতে পারেন তা হলঃ ক) ইংরেজি শুনুন (ইংরেজী সংবাদ, অডিও গল্প, সঙ্গীত, চলচ্চিত্র ইত্যাদি। খ) ইংরেজিতে চিন্তা করুন এবং বাংলা শব্দগুলি (যেগুলি আপনি ইংরেজী অর্থ জানেন না) লিখুন এবং বাংলা টু ইংরেজি অভিধান থেকে ইংরেজি অর্থ অনুসন্ধান করুন। বিশেষ করে বাংলা একাডেমীর বাংলা টু ইংরেজি অভিধানে। গ) ইংরেজি সংবাদপত্র, গল্পের বই, জার্নাল ইত্যাদি পড়ুন। যেটি আপনার জন্য সুবিধার মনে হয়। শুরুতে ছোট অনুচ্ছেদের ব্যবহার করুন। অনুচ্ছেদের অজানা শব্দ সংগ্রহ করুন এবং পরে অভিধান থেকে অর্থ খুঁজে বের করুন এবং একটি ছোট পকেট নোটবুক/ডিকশনারী বা মোবাইলে গুগল ট্রান্সলেটরের সহায়তায় অর্থ জেনে নিন। ঘ) প্রতিদিন কোন একটি বিষয় নিয়ে অনুচ্ছেদ লিখুন এবং আপনি ভাল ইংরেজী জানে এমন কারো থেকে সংশোধন করে নিন। ঙ) একটি গ্রূপ করে একসঙ্গে কথা বলা অনুশীলন করুন। এটা সর্বদা শেখার একটি গ্রূপ হতে হবে। এইভাবে সহজে শিখতে পারবেন ও ফ্লুয়েন্সি আসবে। চ) ইউটিউব ইংরেজি শেখার খুব ভালো মাধ্যম। ইংরেজি অনুশীলন এবং শিক্ষণের টিউটোরিয়াল দেখুন ও চর্চা করুন। ছ) আপনি অনেক ইংরেজি শেখার মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন পাবেন, যার মাধ্যমে আপনি স্বাধীনভাবে অনুশীলন করতে পারেন। জ) ভুল হতে পারে বা আপনি ভুল করেন এমন ভেবে বিরত থাকবেন না। ভুল করুন এবং সংশোধন থেকে শিখুন। ঝ) ব্যকরণগত উৎকর্ষের জন্য আপনি রেমন্ড মারফির Essintial English Grammar ব্যবহার করতে পারেন। ঞ) ভোকাবুলারি বাড়াবার জন্য ”English Vocabulary in use” by McCarthy and O’Dell. ট) উচ্চারণ এবং শোনার দক্ষতা বিকাশের জন্য অডিও সিডি সহ ”Ship or Sheep” কিনে বাসায় প্রাকটিস করুন। আপনি যদি তারপরও চান, তবে শেখার জন্য যেতে পারেন:- a) British Council (Expensive) b) Mentors’ c) S@ifur’s d) Bhuiyan Computers।

এই সেগমেন্টের কন্টেন্ট প্রস্তুত করতে আমার সহকর্মী জনাব হাসান আমাকে অনেকটা সাহায্য করেছেন।

দ্বিতীয় আরেকটি ইস্যুতে প্রশ্ন করেছিলাম যে, চাকরী দাতাদের কী করা উচিৎ? প্রোপার/আধুনিক/সিরিয়াস/টেকনিক্যাল ইন্টারভিউ করা উচিৎ নাকি প্রার্থীদের শুধু সিভিটা দেখেই চাকরীতে নিয়োগ করা উচিৎ। অনেকেই সিরিয়াস ইন্টারভিউ কথাটাকে ভুল বুঝেছেন। সিরিয়াস বলতে আমি কোয়ালিটি বা স্মার্ট বা সময়োপযোগী বা কাজের সাথে উপযুক্ত ইন্টারভিউকে বুঝিয়েছিলাম। অবশ্যই ভিন্ন ভিন্ন জবের ইন্টারভিউ ভিন্ন ধরনের হবে। অনেকেই মতামত জানিয়েছেন ইন্টারভিউ নেবার তেমন আবশ্যকতা নেই। সরাসরি প্রার্থী নিয়োগ করা হোক। প্রাকটিক্যাল কাজ দেখে তারপর রাখা না রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হোক। এটা নিয়ে কোনো বিতর্ক না করে বলছি, এভাবে বিনা ইন্টারভিউতে লোক নিয়োগ পৃথিবীতে কোথাও হয়না। সম্ভবও না। কোনো ইন্টারভিউ না করে এমপ্লয়ার কিভাবে নিয়োগ করবেন? লটারী করে নাকি আগে আসলে আগে পাবেন? আর যদি ইন্টারভিউ ছাড়া লোক নেয়ার কথা বলেন তাহলে তো বিসিএস বন্ধ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ করতে হবে, শিক্ষক নিয়োগে ইন্টারভিউ বন্ধ করতে হবে। শুধুমাত্র মাস্টার্স পাশ কোনো চাকরীপ্রার্থীর চাকরী পাবার বা অফিসার হবার নিয়ামক হতে পারে না। বাংলাদেশের বর্তমান মাস্টার্সের গুনগত মানের অবস্থাতো জানেনই। ভাল কথা, বাংলাদেশেই এখন পিএইচডি বিক্রি হয় যেটা কিনতে আগে বিদেশ যেতে হত।

কেউ কেউ বলছেন, ইন্টারভিউতে ভাল মানেই এমপ্লয়ী ভাল নয়। হ্যা অবশ্যই। কিন্তু তাতে ইন্টারভিউ করার গুরুত্ব তো কমে যাবে না। ভাল কোম্পানীর এইচআর হলে তিনটি দিক বিবেচনায় নিয়ে প্রার্থীর যোগ্যতা বিচার করেন ১। একাডেমিকস মানে লেখাপড়ার রেজাল্ট, ভাষাগত দক্ষতা, করেসপনডেন্স স্কিল, লেখার ক্ষমতা ইত্যাদি ২। ফিজিক্যাল ও মেন্টাল ফিটনেস এবং সার্বিক এক্সপোজার ৩। বুদ্ধিমত্তা, এপিয়ারেন্স, এটিটিউড, স্মার্টনেস, তাৎক্ষনিক বুদ্ধি, ব্যবহার ইত্যাদি। এই তিনটি স্কেলে যোগ্য বিবেচিত হলেই তবেই তাকে এক্সিকিউটিভ চাকরীর জন্য বিবেচনা করা হয়। একজন স্মার্ট জব ক্যান্ডিডেটের ভেতরে আমরা কী কী যোগ্যতা খুঁজব? তার উত্তরে বিভিন্ন সোর্স হতে যে উত্তর পেয়েছি তা হলঃ স্মার্ট ক্যান্ডিডেট তাকে বলব যার মধ্যে এই বৈশিষ্ট আছে- communication skill, body language, eye contact, intelligence, presentation skill, gesture, posture, motivation for the job, appearance, knowledge about subject matter, skill of expressing self, specific, measurable, attainable, realistic, time bound, informed, positive and visionary।

অনেকে বলবেন এত গুণ থাকতে হলে তো চাকরীই হবেনা। এতসব গুন থাকতেই হবে সেটা আমি বলছি বা। ইন্টারভিউয়ার এগুলো মাথায় রেখে ইন্টারভিউ নিয়ে থাকেন। প্রত্যেক প্রার্থীর সত্যিকার অবস্থা যাচাই করেন, এরপর তুলনামূলক যারা এগিয়ে থাকেন তাদের নেন। প্রোপার ও পরিপূর্ণ ইন্টারভিউ তাই এতটা জরুরী।

 

 

মোঃ ওয়ালিদুর রহমান বিদ্যুৎ

এইচআর/এ্যাডমিন প্রফেশনাল, ক্যারিয়ার/সোশ্যাল কাউন্সেলর ও লেখক

ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার

মানবসম্পদ বিভাগ, অনন্ত কোম্পানীজ

[email protected]