খন্দকার শফিকুল হাসান উজ্জ্বল,
হাসুন ভালো থাকুন এবং ভালো রাখুন সবাইকে

দিনশেষে ভালো থাকতে চায় না এমন মানুষ পৃথিবীতে একজনও পাবেন না।
সবাই ভালো থাকতে চায়, অবশ্যই সবাই। অথচ ভালো রাখা এবং ভালো থাকার ফ্রি ঔষধ যে হাসি খুশি থাকা, এটা ক'জনে জানে বা জানার চেষ্টা করে, কিংবা মানার চেষ্টা করি আমরা?
ভালো থাকার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে এই হাসির বিষয়টি। ভালো থাকতে হলে হাসিখুশি থাকার চেয়ে সহজ উপায় আর হয়না। যিনি যতটা হাসিখুশি থাকেন, দিন শেষে তিনি নিজেকে ততটাই সুখী মানুষ হিসেবে আবিষ্কার করতে পারেন। দীর্ঘদিন সুস্থ ও সুখী মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকতে চাইলে হাসিখুশি থাকার বিকল্প নেই।
আসুন জানি হাসির কিছু উপকারিতাঃ
- হার্টের সমস্যা তুলনামূলক ভাবে খুব কম হয়।
- হাসতে জানলে ব্যক্তিগত জীবনেও নানা রকমের সমস্যায় পড়তে হয়না, হঠাৎ কারোও সাথে অনাহূত মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়না সুতরাং তুলনামূলক কম দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকতে হয়। মন রাখা দরকার যে - মানুষিক দুশ্চিন্তা ধিরে ধিরে মানুষকে বার্ধক্যের দিকে ঠেলে দেয়, রোগ বালাইয়ের কারনে আয়ু কমিয়ে দেয়।
- মানুষ যখন হাসে তখন দেহের রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায় এবং অক্সিজেন গ্রহণের মাধ্যমে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
- হাসি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে সাথে নতুন করে মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়তে, নেটওয়ার্কিং করতে সাহায্য করে।
- হাসি মানুষকে একে অপরকে কাছাকাছি রাখতে সাহায্য করে এবং সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে সাহায্য করে।
- হাসি মস্তিষ্কের এনডোরফিন (একটি হরমোন) নামের একটি কেমিক্যাল নিঃসরণ করে থাকে যা আমাদের দেহের ব্যথা দূর করে।
- হাসি এবং রাগের একে অপরের প্রশমক। তাই হাসলে রাগ আনুপাতিক হারে কমতে থাকে। পৃথিবীতে যত অনিষ্ট হয়েছে অদ্যবধি তার প্রায় সবই রাগের মাথায় ভুল সিদ্ধান্তের কারনে। সুতরাং হাসি যত সার্বজনীন (যত বেশি মানুষের মধ্যে অনুশীলন) হবে রাগ তত কমবে, পৃথিবী থেকে "ধ্বংস" নামক শব্দটা তত দ্রুত বিলুপ্ত হতে থাকবে।
- হাসি দেহকে ক্যান্সার রোগ থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। আমেরিকার ক্যান্সার ট্রিটমেন্ট সেন্টারে ক্যান্সার রোগীদের হাসানোর জন্য বিশেষ থেরাপি দেয়া হয়ে থাকে।
- হাসি তাৎক্ষণিকভাবে মানুষকে দেখতে সুন্দর করে। তাছাড়া হাসিখুশি থাকলে মানুষকে শুধু দেখতেই সুন্দর লাগে না, তার হৃদপিণ্ডসহ শরীরের অঙ্গগুলোও একটা অদৃশ্য এনার্জি পায় যার কারনে মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে কর্মতৎপর হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে পড়ে।
হাসিখুশি থাকার কৌশলঃ
হাসিখুশি থাকার কৌশল জানতে গুগল কিংবা ইউটিউবকে প্রশ্ন করলে অসংখ্য থিওরি বা রাস্তা দেখা যাবে। কিন্তু আমি বলবো কোনো পুথিগত সূত্র জানা লাগেনা প্রানবন্ত হাসি দিতে, শুধু মানুন নিচের নিয়মগুলো-
- নিজের অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন সর্বদা
- নিজের অবস্থানের চাইতে নিচের দিকে সবসময় দেখুন এবং তাদের নিয়ে ভাবুন।
- সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকুন।
- মনকে সব সময় বলুন - "সব কিছু ঠিক আছে, আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি"
- কেউ খারাপ কিছু আপনাকে বললে মনে মনে বলুন আপনার এই বস্তা ভর্তি নোংরা আমি নিলাম না। তারপর সিচুয়েশান বুঝে নিজেকে কিংবা তাকে হাসি দিয়ে অন্যকিছুতে মন দিন। (দয়া করে এটা জোরে বলার দরকার নেই)
- দিনে অন্তত একবার আয়নার সামনে দাড়িয়ে হাসুন। মনে রাখবেন আপনি যদি অন্যের কাছে হাসি আশা করেন তাহলে আপনাকেই সেটা আগে দিতে হবে। হাসি দিতে হাসিকে চেয়ে নিন সবার কাছ থেকে।
আপনার একটি হাসি পারে আপনার এবং সবার পৃথিবীটাকে বদলে দিতে।
খন্দকার শফিকুল হাসান উজ্জ্বল
বিক্রয় শিল্পী